জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সেনা প্রধানের নতুন বার্তা

 জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সেনা প্রধানের নতুন বার্তা

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনা সদস্যদের আইন অনুযায়ী নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত হতে বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এরই মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষিত হয়েছে। সরকার ঘোষিত সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে বদ্ধপরিকর। দীর্ঘ সময় ধরে সেনা সদস্যরা মাঠে দায়িত্ব পালন করছেন।আগে এত দীর্ঘ সময় তাঁদের মাঠে থাকতে হয়নি। তাই সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। দূরত্ব থাকলে তা দূর করতে হবে। সেনাবাহিনী সম্পর্কে নানা কটূক্তির জবাবে তিনি বলেন, ‘এসব গালাগালিতে অখুশি হওয়ার কিছু নেই।




যারা এসব করছে, তাদের বয়স কম। তারা আমাদের সন্তানের বয়সী। তারা বড় হলে নিজেদের ভুল বুঝতে পারবে। তখন নিজেরাই লজ্জিত হবে।’




গতকাল মঙ্গলবার সকালে ঢাকা সেনানিবাসে ‘অফিসার্স অ্যাড্রেস’ অনুষ্ঠানে সেনা সদস্যদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন সেনাপ্রধান। এতে সব সেনানিবাস ও জাতিসংঘ মিশনে মোতায়েন সেনা অফিসাররা ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। সেনাবাহিনী প্রধান প্রায় ৩৮ মিনিট বক্তব্য দেন এবং এরপর প্রায় এক ঘণ্টা সেনা কর্মকর্তাদের প্রশ্নের উত্তর দেন বলে জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এটি ছিল সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের একটি নিয়মিত মতবিনিময় সভা।




আরও পড়ুনঃ বাবাই মাকে খুন করেছে’, ছবি এঁকে পুলিশকে দিল ৪ বছরের শিশু


এ বিষয়ে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।




আইএসপিআর পরিচালক লে. কর্নেল সামি উদ দৌলা কালের কণ্ঠকে বলেন, এটি সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ বিষয়।


সূত্র জানায়, জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান তাঁর প্রাথমিক বক্তব্যে নিরলসভাবে কাজ করে দেশের প্রতি দায়িত্ব পালনের জন্য সেনাবাহিনীর সব সদস্যকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, এই ঐতিহাসিক ভূমিকার জন্য বাংলাদেশের মানুষ সেনাবাহিনী ও এর প্রত্যেক সদস্যের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে।


তিনি সেনা সদস্যদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে এবং বাহিনীর চেইন অব কমান্ড অক্ষুণ্ন রাখার আহবান জানান এবং বলেন, দেশের মানুষ এখন সেনা সদস্যদের দিকে তাকিয়ে আছে। তোমরা দেশের ভবিষ্যৎ। তাই দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। সেনাবাহিনী একটি পেশাদার সংগঠন। মাঠে দায়িত্ব পালনের সময় পেশাদারিত্ব দেখাতে হবে। প্রতিশোধমূলক কোনো কাজে জড়ানো যাবে না।সামাজিক মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও এর সদস্যদের বিরুদ্ধে চলমান অপপ্রচারের বিষয়ে তিনি সবাইকে ধৈর্য ধারণ করতে বলেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন ব্যক্তি তাদের বিভিন্ন স্বার্থ উদ্ধারের লক্ষ্যে এমন কাজ করছে। এসবের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে পেশাদারি আচরণ করাই শ্রেয়। তবে এই সব অপরাধ যথাযথভাবেই লিপিবদ্ধ থাকছে এবং উপযুক্ত সময়ে এই বিষয়ে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।




আরও পড়ুনঃ সেকেন্ড রিপাবলিক, গণপরিষদ ও ইনকিলাব জিন্দাবাদ- কী বার্তা দিচ্ছে নতুন দল


দেশি-বিদেশি বিভিন্ন মহল বিভিন্ন হীনস্বার্থ উদ্ধারের লক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুল তথ্য ও অপপ্রচার ছড়াচ্ছে। তবে সেনাবাহিনীর ঐক্য ও পেশাদারি আচরণের কারণে তারা তাদের হীন উদ্দেশ্য অর্জন করতে পারেনি বলে জেনারেল ওয়াকার উল্লেখ করেন।জানা যায়, ইন এইট টু সিভিল পাওয়ার কর্তব্য পালনের অংশ হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় কোনো জীবনহানি বা আহত হওয়ার ঘটনা যেন না ঘটে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেন সেনাপ্রধান।




নাম উল্লেখ না করে সেনাপ্রধান বলেন, একজন সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ তদন্তাধীন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেনাবাহিনীর কোনো সদস্য রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়াতে পারবেন না। আরেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ নিয়েও তদন্ত চলছে। নৈতিক স্খলনের বিষয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তবে মিডিয়া ট্রায়ালের ভিত্তিতে কাউকে সাজা দেওয়া হবে না, অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সবাইকে মনে রাখতে হবে, অপ্রতুল প্রমাণের ভিত্তিতে অপ্রয়োজনীয় দ্রুততার সঙ্গে বিচার করলে তাতে ভুল হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই প্রয়োজনীয় সময় নিয়ে যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণ সংগ্রহ করে চলমান সব অভিযোগের বিষয়েই যথাযথ বিচারিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Countdown Timer
00:01

Comments

Popular posts from this blog

ব্রেকিং নিউজ : দেশবাসীর উদ্দ্যেশ্যে জরুরী ঘোষণা দিলেন সেনাপ্রধান!

ঘটনার নতুন মোড়, জাতির উদ্দেশ্যে সেনা প্রধানের জরুরী বার্তা